সংস্কার আলোচনা যত দীর্ঘ হবে দেশ তত সংকটে পড়বে: তারেক রহমান
ডেস্ক : সংস্কার প্রস্তাবের আলাপ-আলোচনা যত বেশি দীর্ঘায়িত হবে দেশ তত বেশি সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক কর্মশালায় এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘যদি নির্বাচন প্রক্রিয়া দেরি হয়, যদি সংস্কার করে আমরা সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করতে থাকি- তাহলে স্বৈরাচার সুযোগ পেয়ে যাবে। যে স্বৈরাচারকে বাংলাদেশের সব মানুষ, দল-মত নির্বিশেষে, শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সব মানুষ একত্রিত হয়ে এ দেশ থেকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। সেই স্বৈরাচার সুযোগ পেয়ে যাবে আবার দেশের মানুষের কাঁধে চেপে বসার।’
তিনি বলেন, ‘যেসব ব্যক্তি, সমাজের বিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ, সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ যারা সংস্কারের কথা বলছেন- আপনাদের সবার কাছে রাজনৈতিক দলের অবস্থান থেকে আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, সংস্কার সংস্কার বক্তব্য রেখে এই আলাপ দয়া করে দীর্ঘায়িত করবেন না। কারণ আপনারা সংস্কারের আলাপ যত দীর্ঘায়িত করবেন দেশ তত বেশি সংকটের মুখে পড়বে। আপনারা সংস্কার আলাপ যত দীর্ঘায়িত করবেন দেশে তত ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে।’
তিনি বলেন, ‘কাজেই যত যাই কথা বলি না কেন আমরা সংস্কার বাস্তবায়ন যত দেরি করবো…. যে কথাটি আমি এখনই বলেছি, সংস্কারের কাজও যদি শুরু করতে হয় সেটি নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত মানুষের মাধ্যমেই বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই সংস্কার বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। কারণ যারা নির্বাচিত হয়ে আসবে তারা জনগণের কাছে ওয়াদা করবে যে, তারা সুযোগ পেলে বাস্তবায়ন করবে এসব সংস্কার।’
‘সংস্কার যত দ্রুত বাস্তবায়ন করা যাবে দেশকে, দেশের মানুষকে তত দ্রুত আমরা বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারবো।’
তারেক রহমান বলেন, ‘কাজেই আসুন এই সংস্কারকে বাস্তবায়ন করতে হলে উপায় একটাই… যে সংস্কার প্রস্তাব বিএনপি দিয়েছে, যে সংস্কার প্রস্তাব অন্তর্বর্তী সরকারের কমিশনগুলো তৈরি করে দিয়েছে… যেটাই হোক না কেন- এই সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই। একটিই পথ নির্বাচন।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায়। এটা সবাইকে অনুধাবন করতে হবে।’
বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আসুন আজকের এই কর্মশালার মাধ্যমে আমার দলের নেতাকর্মী এখানে যারা উপস্থিত আছেন সবাই মিলে আজ আমরা প্রতিজ্ঞা করি যে, বাংলাদেশের মানুষ আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিলে যেই সংস্কারের ওয়াদা আমরা জনগণের সামনে দিয়েছি- আমাদের সবার অবস্থান থেকে সেই ওয়াদা সর্বোচ্চ পূরণের চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে শ্যামপুরের কদমতলীর বালুর মাঠে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তারেক রহমান।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন প্রমুখ।