৭৬ বছর বয়সী ভিক্ষুক আয়েশার পায়ে গুলি, খোঁজ নেইনি কেউ

মনজুরুল ইসলাম মেঘ : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দাবিতে ৪ আগস্ট রাজপথে পুলিশের ছোড়া গুলিতে আহত ভিক্ষুক আয়েশা বেগমের (৭৬) পাযের ক্ষত সারলেও এখনো সুচিকিৎসা পায়নি, পায়ে রয়ে গেছে গুলি। তাকে পুর্নাসন করা হয়নি, খোঁজ নেয়নি অন্তবর্তী সরকার।

সত্তরোর্ধ্ব  বিধবা আয়েশা বেগমের (৭৬) সন্তান নেই।

অন্তর্বতী সরকার গঠনের তিনমাস পার হলেও সরকার কর্তৃক পুর্নবাসন না করায় আহত পায়ে গুলি থাকা অবস্থায় জীবিকার তাগিতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে হেঁটে ভিক্ষার জন্য রাস্তায় বের হতে হচ্ছে তাকে, এ যেনো “অরণ্যে রোদন”।

৭৬ বছর বয়সী একন বিধবাসন্তানহীন নারীকে রাষ্ট্রের ভরণপোষন করার কথা, সেখানে তিনি এই বয়সেও ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেছেন। যে বৈষম্যর জন্য বুকের তাজা রক্ত দিয়েছে প্রায় দেড় হাজার মানুষ, আহত হয়েছে প্রায় কুড়ি হাজার, তাদের মধ্যে আয়েশা বেগম একজন। রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের উচিৎ ছিলো তাদের খোজখবর নেওয়া, পুর্নবাস করা। রাষ্ট্র আন্দোলনকারীদের মূল্যায়ণ করতে ব্যার্থ হয়েছে, এই দায় অন্তর্বতী সরকার কোন ভাবেই এড়াতে পারেনা।

আয়েশা বেগম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘আমি চাইয়া খাই বাবা। মানুষের কাছে ভিক্ষার জন্য গেছিলাম। রাস্তায় ওরা গুলি করছে। আমার পায়ে লাগছে। কয়েকজন আমারে হাসপাতালে নিয়া গেছিল। পরে বাইত (বাড়ি) আইয়া পড়ি। কয়দিন ধইরা পা ব্যথা করতাছে, জ্বর আহে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক্সরে করার পরে রিপোর্টে ধরা পড়েছে বাম পায়ের ভেতর এখনো গুলি আছে’।

আয়েশা বেগমকে আশ্রয় দেওয়া সাব্বির হোসেন বলেন, ‘আয়েশার বাড়ি চাঁদপুর হলেও বহুবছর ধরেই মুন্সিগঞ্জে থাকেন। ভিক্ষা করে জীবন চলে। সরকারের উচিত ওনার যথাযথ চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়া।’

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সিভিল সার্জন মঞ্জুরুল আলম গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। তার নাম জুলাই-আগস্টে আহতদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত সব সুবিধাই তিনি পাবেন।

এই ৭৬ উর্দ্ধ বিধবাকে রাষ্ট্র যে সুবিধা দিবে সেটি কি মৃত্যুর পরে? যদি তাই না হয়, তাহলে রাষ্ট্র কেনো এখনো তালিকা করতে পারেনি? রাষ্ট্র কেনো তালিকা করতে এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়নি, রাষ্ট্র যে ভাবে আদমশুমারী করে ঠিক সেই ভাবে জুলাই ৩৬ বিপ্লবে আহত ও নিহতদের তালিকা করতে পারেন। রাষ্ট্র সঠিক তালিকা করবেনা, কারণ রাষ্ট্র সব সময় লাশের মাড়িয়ে রক্তের উপর পা দিয়ে নোংড়া রাজনীতি করতে চায়।

সোনালী সকাল নেমে আসুক বাংলাদেশের বুকে, আর কোন লাশ না পড়ুন, রক্ত না ঝড়ুক। আহত না হতে হোক আর কোন আয়েশাকে।

কৃতজ্ঞতা : জাগো নিউজ

Share