সিরাজগঞ্জে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ছাত্রদল নেতার মানহানি করার উদ্দেশ্য, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তিকে হত্যা সাজিয়ে ছাত্রদল নেতা, তার পরিবার এবং স্থানীয় কর্মী সমর্থকদের নামে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের অভিযোগ উঠেছে।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পাঁচলিয়ায় সড়ক দূর্ঘটনায় সবুজ শেখ (২৮) নামের এক বাস চেকারের মৃত্যু হয়েছে। অথচ এই মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাকিব হোসেন খাঁন, তার পরিবার ও তার স্থানীয় কর্মী সমর্থকদের নামে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রাকিবের দাবী ছাত্রদল করার কারণে দীর্ঘ এবং তার পরিবার বিএনপির সমর্থক হওয়ায় আওয়ামী লীগ বারবার অত্যাচার-নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। মিথ্যা মামলা থেকে রাকিবসহ তার পরিবারকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
জানা যায় গত ২০ সেপ্টেম্বর সড়ক দূর্ঘটনায় গত ২০ সেপ্টেম্বর নিহত সবুজ শেখ (২৮)। এর ৫ দিন পরে গত ২৫ সেপ্টেম্বর নিহত সবুজ শেখের বড় ভাই হাটিকুমরুল ইউনিয়ন কৃষকলীগ নেতা নূরনবী শেখ ফিরোজ বাদি হয়ে তার ভগ্নিপতি সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মোহাব্বত আলী শামিম সহ আওয়ামিলীগ নেতাদের কে সাক্ষী বানিয়ে সিরাজগঞ্জ আদালতে একটি হত্যা মামলা করেছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার পাঁচলিয়া এলাকায় গাড়ীর চেক মাষ্টারের কাজ করছিলেন হাটিকুমরুল ইউনিয়ন কৃষকলীগ নেতা নূরনবী শেখ ফিরোজ। গত ৫ আগস্টের বৈষম্য বিরোধী বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সিরাজগঞ্জ রোডের কর্মসূচিকে ঘিরে ছাত্রজনতার উপর হামলা চালান নূরন্নবী শেখ ফিরোজ। এরপর থেকেই তিনি পলাতক থেকে তার ভাই সবুজকে দিয়েই তার চেকারের কাজটি করাছিলেন। এরই মধ্যে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাত ২টার দিকে গাড়ী চেকিং করে গাড়ী থেকে নামার সময় বিপরীত থেকে একটি দূরপাল্লার বাস তাকে চাপা দিয়ে দ্রুত চলে যায়। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে নেওয়ার পথে সবুজ মারা যায়।
দূর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা হানিফ গাড়ির চেকার রাব্বি ও চেকার সিফাত জানান, ৫ আগস্টের পর থেকেই চেকার নূরন্নবী শেখ ফিরোজ পলাতক রয়েছে। তার স্থলে তার ভাই সবুজ শেখ গাড়ি চেকিং করছিলেন। তাকে গাড়ী চেকিং শেষে বার বার অসতর্কতার সাথে নামার জন্য আমরা তাকে বেশ কয়েকবার সতর্ক করেছি। ঘটনার দিন সবুজ আমাদের থেকে ২০০ মিটার দূরে গাড়ি চেক দিচ্ছিলেন। গাড়ী চেক শেষে নামার সময় দূরপাল্লার একটা গাড়ির সাথে মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলে পড়ে যায়। আমরা দ্রুত সিএনজিতে তুলে তাকে মনসুর আলী মেডিক্যালের উদ্দেশ্য পাঠিয়ে দেই। কিছুক্ষণ পরই আমরা শুনতে পাই হাসপাতালে সবুজ মারা গেছে। পরবর্তীতে তার মরদেহ দাফন করার জন্য গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় পাচঁলিয়া বাজারের লোকদের কাছে শোনা যায় এটা একটা মর্মান্তিক এক্সিডেন্টের মৃত্যু।
এ বিষয়ে সলঙ্গা থানা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মজিদ খান জানান, এই মিথ্যা মামলার একমাত্র উদ্দেশ্য একজন তরুণ ছাত্রনেতার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে মিথ্য অভিযোগে ধ্বংস করা এবং আওয়ামী লীগ এলাকায় কিছুটা চাপ মুক্ত থাকার রাস্তা খোঁজা। সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিকে হত্যা সাজিয়ে মামলা তদন্তে টিকবে না।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাকিব হোসেন খাঁন জানান, আমি আমার দল আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ম্যানুপূলেটেড করা যায় না, সুতরাং এটা অচিরেই প্রমাণিত হবে। আওয়ামী লীগ মিথ্যাচারের দল আওয়ামী লীগ প্রতারকের দল সুতরাং তারা তাদের প্রতারণা মিথ্যাচারের ফাঁদে আমাদের ফেলেছে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য। আমি আমার সকল শুভাকাঙ্খীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। বিগত আন্দোলন সংগ্রামে সিরাজগঞ্জের উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হাটিকুমরুলে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন আমার ছোট ভাই আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ছাত্র কে এম মেহেদী হাসান রাব্বি তাকেও এই মিথ্যা মামলার আসামী করা হয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালে একই ব্যাক্তিরা ছাত্রদল নেতা রাকিবের গ্রামের বাড়িতে হামলা করে লুটপাট করে নগদ সাড়ে চার লক্ষ টাকা ও বোনের বিয়ের জন্য কিনা ৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। যার ভিডিও ফুটেজ ও তথ্য প্রমান রাকিবের পরিবারের কাছে সংরক্ষিত আছে। ওই সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচারের আশ্বাসে এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শনের কারণে রাকিব এর পরিবার থানায় মামলা করতে পারে নাই। রাকিবও তার পরিবার একাধিকবার রাজনৈতিক মামলার শিকার হয়েছেন।