Thursday, November 7, 2024
সারাদেশ

সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম হত্যার বিচার ও প্রকৃত মালিকদের কাছে ভূমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি

গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধিঃ বিগত ৬ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে গাইবান্ধার সাহেবগঞ্জ বাগদা-ফার্মের আদিবাসী সাঁওতাল বাঙ্গালী প্রান্তিক পল্লীতে পুলিশ ও আমলা সন্ত্রাসী হামলায় মারধর, গুলি ও অগ্নিসংযোগে নিহত ৩ সাঁওতাল শ্যামল হেম্ব্রম, মঙ্গল মার্ডি ও রমেশ টডু হত্যার বিচার ও ৭ দফা দাবী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজ ৬ নভেম্বর ২০২৪ বুধবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ কাটামোড়ে ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী ও সাঁওতাল হত্যা দিবস পালনে শোক র‌্যালী ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি সভাপতি মিঃ বার্নাবাস টুডুর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেখ নাছির উদ্দিন। আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছামিউল আলম রাসু, আদিবাসী গবেষণা পর্ষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, ফরিদুল ইসলাম ফরিদ চেয়ারম্যান, তিস্তা নদী রক্ষা কমিটি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশে পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ন্যায়পাল রাষ্ট্র সংষ্কার আন্দোলনের এড. রায়হান কবির, রাষ্ট্র সংষ্কার আন্দোলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক কনক রহমান, রাষ্ট্র সংষ্কার আন্দোলন রংপুরের আহবায়ক অধ্যাপক চিনু কবির, রাষ্ট্র সংষ্কার আন্দোলন গাইবান্ধার সভাপতি মৃণাল কান্তি বর্মন, গাইবান্ধা যুব সংষ্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক কনক সরকার, আতাউর রহমান সাবু, সুফল হেমব্রোম, স্বপন শেখ প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেখ নাছির উদ্দিন বলেন, বাগদা ফার্ম তিন হত্যা বিচার, মিথ্যা মামলাসহ প্রকৃত ভূমির মালিকরা যাতে জমির মালিকানা ফির না পায় সে জন্য গুটিকয়েক নেতা তারা এই সাধারণ ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে তাদেরকে বিভ্রান্ত করছে। কিছু নেতা গাইবান্ধায়, কিছু নেতা ঢাকায়, রাজনৈতিক এনজিও বাটপারদের নিয়ে নিজেদের উন্নয়নে ব্যস্ত। তাদের কাজ হলো ভালো ভালো কথা বলে সাধারণ মানুষের আবেগ বিক্রি করে খাওয়া আর অন্যদের দোষারোপ করা। আপনারা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাধারণ কৃষক এই জমির মালিক আপনাদের চিহ্নিত করতে হবে। এই টাউট—বাটপাররা যাতে আর নতুন করে আপনাদের মাথা বিক্রি করতে না পারে সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। অনেক নেতারা, সরকারি আমলারা, টাউট—বাটপাররা বিভিন্ন ছদ্মবেশে আপনাদের সাথে মিশে যাবে, আপনাদের বাপ—মাও সাজবে, এদের থেকে সাবধান।

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, বর্তমান উপদেষ্টাগণকে আবারও মনে করে দিতে চাই, আপনারা স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠন করে প্রকৃত জমির মালিকদের মাঝে জমি ফেরত দিন, হত্যা মামলার বিচার করুন, মিথ্যা মামলা নিষ্পত্তি করুন।

এ সময় বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছামিউল আলম রাসু বলেন, আবেদন জমা হয়েছে, অলরেডি মামলা নিষ্পত্তির আশ্বাস দিয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে, আশাকরি খুব দ্রুত ভালো খবর আসবে। কিন্তু কিছু দালাল চায় না সমস্যার সমাধান হোক, সমাধান হলে তো ব্যবসা হবে না। সব জায়গায় বৈষম্য দুর হচ্ছে আর বাগদা ফার্মে বৈষম্য বাড়ছে। একসময় সবাই এক ছিল সেখান থেকে এখন ৩/৪ ভাগ হচ্ছে, আদিবাসী বাঙালী হয়তো আলাদা হবে। ২০১৮ সাল থেকে এদের এক করার চেষ্টা করছি, আওয়ামী ফ্যাসিজমের কারনে সম্ভব হয়নি। বর্তমানে আরো নতুন কিছু যোগ হয়েছে— নেতৃত্ব, জমি বন্ধক রাখা, পুকুর বন্ধক রাখা, এর ধান ও কাটা, একজনের জমি আর একজন দখল করা, বালুর পয়েন্ট ব্যবসা, সদস্য ভর্তি, প্রতি বিঘা জমির জন্য সাধারণ কৃষকদের চাঁদা ৫০০/৩০০, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের চাঁদা, এনজিও অনুদান, রাজনৈতিক অনুদান, ব্যক্তি অনুদান, বিদেশি দান অনুদান, ভাগবাটোয়ারা, ঐতিহ্যের বাংলা তারি, নতুন কতুবদের ইন্ধন, আগের আওয়ামী দালাল বর্তমান দালাল, স্থানীয় গ্রামের আদিবাসী বাঙালী বস্তির আদিবাসী বাঙালী ক্ষমতা বিবাদ, জমির প্রকৃত কাগজ ওলা ভুয়া দাবি ইত্যাদি। কেও চায় সমস্যার সমাধান হোক কেও চায় সমাধান না করে ব্যবসা চালিয়ে রাখা। আবার হত্যা মামলার মূল আসামীদের মামলার আসামীই করা হয়নি বিশেষ সুবিধা দিয়ে, ভিডিও ফুটেজ আছে আমার কাছে অথচ তারা কেও মামলার আসামি নয়, নেতাদের ডোনার, সব মিলিয়ে জগাখিচুরি একটা অবস্থা। ৬টা এনজিও কাজ করে এখানে তাদের সবার ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে, নেতাদের বাড়ি—গাড়ি যাবতীয় উন্নয়ন হয়েছে, আর সাধারণ মানুষ টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারে না। তিন শহিদ পরিবার বঞ্চিত, আহত পরিবার অসহায় কেও খোঁজ রাখে না। আমরা সহ নজরুল ইসলাম ভাই খরচ দিতে চেয়েছে তিন শহীদের মুর‌্যাল তৈরি করতে, আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা শাহনাজ ভাইয়ের নামে মঞ্চ তৈরি করতে, একটি শহীদ মিনার তৈরি, সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির একটি দৃশ্যমান অফিস, কোনটাই এরা করতে দেয়নি। এক করতে চাইলে এ নেতা ওর দোষ দেয় সে নেতা আর একজনের দোষ দেয় আবার গোপনে মিটিং করে তলে তলে ঠিক থাকে। যা শুরু হয়েছে সাধারণ জনগণ কখন যে ডিম থেরাপি দেয় আল্লাহ মালুম। যা বললাম সরেজমিনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তদন্ত করে দেখতে পারেন, দেখবেন সত্যি না মিথ্যা বলছি। তারপরও আশা ছারি নাই একজন মানুষ সত্যিকারের সহযোগিতা চাইলে তার সাথে আছি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফেসবুক সংবাদ

Moralook Limited