রাজনীতির থাবায় শিক্ষকতা: ড. শরমিনের অবৈধ কর্মকাণ্ড

ডেস্ক: ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী টানা ১৪ বছর ধরে রাজশাহী অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (ডিডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। যদিও তিনি একজন শিক্ষক, তবে প্রেষণে উপপরিচালকের পদে রয়েছেন। পদটি রক্ষার জন্য তিনি নিজের ক্যারিয়ারে অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি দীর্ঘ তালিকা যুক্ত করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাঁকে দলের দৃষ্টিকোণের ভিত্তিতে এই পদের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় এবং এরপর থেকে তিনি পদটি ছাড়েননি।

ড. শরমিনের বিরুদ্ধে বদলি বাণিজ্য, অনিয়মের মাধ্যমে এমপিও প্রদান, উচ্চতর বেতন স্কেলের জন্য ‘উৎকোচ’ গ্রহণ এবং অধীনস্তদের সঙ্গে খারাপ আচরণের মতো বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে, তবে তিনি এখনো নিজের পদে বহাল আছেন।

এদিকে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাঁর অপসারণের দাবিতে দুই দিন ধরে রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা ভবন ঘেরাও করেন। পরিস্থিতি খারাপ হতে দেখে ডিডি শরমিন ওই দুই দিন অফিসে যাননি।

তিনি এখনো সকালে কিছু সময় এবং বিকালের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিসে বসেন। সারা দিন অফিসে না থাকার কারণে বিভিন্ন কাজে আসা শিক্ষকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থায়, ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখা ড. শরমিনের অপসারণ দাবি করে মাউশির মহাপরিচালকের কাছে অভিযোগ দাখিল করেছে। এতে সংগঠনের জেলা ও মহানগরের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষর করেছেন।

এছাড়া, জেলার ৯টি উপজেলার শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরাও স্বাক্ষর করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, ড. শরমিন ১৪ বছর ধরে রাজশাহী অঞ্চলে মাউশির ভারপ্রাপ্ত ডিডি হিসেবে কাজ করছেন এবং তাঁর অত্যাচার ও নির্যাতনে শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতিদিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তিনি সরকারি বিধি অমান্য করে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন, উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির ফাইল বাতিল করেন এবং পরে দালালের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করেন।

ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ২০১৯ সাল থেকে একই অভিযোগ অসংখ্যবার করা হয়েছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পদে থাকার অভিযোগও ভিত্তিহীন। সাবেক মেয়রপত্নী আমার ছাত্রজীবন থেকে পরিচিত ছিলেন। এ কারণে তাঁর সঙ্গে আমার কিছুটা হয়তো ঘনিষ্ঠতা ছিল, সেটিকেই অনেকে রং মাখিয়ে রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরছে।”

Share