ডিজিটাল আসক্তি: তরুণ প্রজন্মের জন্য বিপদের ঘণ্টা
সপ্তর্ষি: তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে কমবেশি সকলেই স্মার্টফোন বা ডিজিটাল আসক্তির শিকার। কখনও কাজ, কখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটানো, কখনও সিনেমা দেখা বা গেম খেলার মতো বিভিন্ন কাজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মগ্ন থাকে মানুষ।
এর ফলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ক্রমশ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে অল্প বয়সীদের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে ডিজিটাল ডিমেনশিয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
মূলত, ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং এর ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীলতার কারণেই এই সমস্যাটি দেখা দিচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ডিজিটাল ডিভাইসের অত্যধিক ব্যবহার মস্তিষ্কের নানা সমস্যার সৃষ্টি করছে। বর্তমানে তরুণ সম্প্রদায় এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ডিজিটাল ডিমেনশিয়ার লক্ষণ বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা তাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপকে ব্যাহত করছে এবং পড়াশোনা বা কাজের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে।
মস্তিষ্কের একাগ্রতা ও ভুলে যাওয়ার সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা মোবাইল ব্যবহারের ফলে তরুণদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা এবং মানসিকতার উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে, মনঃসংযোগের অভাব এবং ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, দিনে তিন ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন টাইম আসক্তির দিকে নিয়ে যায়। বিশেষ করে, যাদের স্ক্রিন টাইম ১২-১৫ ঘণ্টা, তাদের জন্য এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক।
রাতে দীর্ঘ সময় স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে ঘুমের সমস্যাও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নীল আলো মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে এবং ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় মেলাটোনিন হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী? তথ্যপ্রযুক্তির যুগে স্মার্টফোন ছাড়া এক মুহূর্তও কাটানো যেন অসম্ভব। ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং এর উপর নির্ভরশীলতার কারণে অনেকেই ডিজিটাল ডিমেনশিয়ার শিকার হচ্ছেন। ফলে স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বাঁচার উপায় ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে ডিজিটাল ডিটক্স করা উচিত। স্ক্রিন টাইম নির্ধারণের পাশাপাশি সময়ে সময়ে বিরতি নেওয়াও প্রয়োজন। বাস্তব জীবনে বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো এবং দৈনিক স্ক্রিন টাইম ৩ ঘণ্টার মধ্যে রাখা এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য কার্যকর উপায় হতে পারে।