যারা ভাবছেন সংসদের কিছু চেয়ার দিয়ে ছাত্রদের কিনবেন ভুল ভাবছেন
ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকার গণঅভ্যুত্থানের সময় আমাদের কিনতে পারেনি। এখন যারা ভাবছেন সংসদের কিছু চেয়ার দিয়ে ছাত্রদের কিনে ক্ষমতা দখল করবেন, তারা ভুল ভাবছেন। ক্ষমতার দিকে যারা যেতে চাচ্ছেন, তাদের বলি, আপনারা ক্ষমতার দিকে না গিয়ে জনতার দিকে আসুন। আমরাও আপনাদের পাশে থাকবো।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ সড়কের পৌর মুক্তমঞ্চ মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ‘রাইজিং চুয়াডাঙ্গা’ শীর্ষক ছাত্র-জনতার মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নুসরাত তাবাসসুম, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মোল্লা এহসান এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির ঢাকা মিরপুরের সদস্যসচিব গোলাম রাব্বানী।
হাসনাত আবদুল্লাহ চুয়াডাঙ্গা জেলার অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা এত বড় একটি জেলা হওয়ার পরেও এখানে উন্নয়নের দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এখনো ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে সেবা দিচ্ছে, যা একটি বৃহৎ জেলার জন্য অত্যন্ত অপ্রতুল। এখানকার শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যসেবায় কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা সীমান্তবর্তী জেলা হওয়া সত্ত্বেও এখানে প্রয়োজনীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। জেলার ছাত্রছাত্রীরা আধুনিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চুয়াডাঙ্গার উন্নয়নের জন্য ছাত্র-জনতাই এগিয়ে আসবে।’
আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের বিষয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চান, তারা ভুল করছেন। আওয়ামী লীগ তাদেরই হত্যা করেছে যারা তাদের পুনর্বাসন করেছে। গর্দান ও তলোয়ার কখনো একসঙ্গে থাকতে পারে না। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে, এটি দেশকে আরও বিভক্ত করবে।’
ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘দেশের ছাত্রসমাজ যদি এক হয়ে কাজ করে, কোনো শক্তিই তাদের হারাতে পারবে না। আওয়ামী লীগের অত্যাচারের শিকার যারা, তাদের কথা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। ছাত্র-জনতা যারা রাস্তায় প্রাণ দিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগ আমাদের ভবিষ্যত গড়তে সহায়তা করবে।’
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের অত্যাচারের শিকার ১৬ বছর ধরে নির্যাতিত জনগণের জন্য আমরা সবকিছু করেছি। তাদের যন্ত্রণাগুলো ভুলে গেলে চলবে না। তারা অনেক ভুগেছে, আতঙ্কের মধ্যে জীবন কাটিয়েছে, এসব কিছু তারা কখনো ভুলবে না।”
হাসনাত আব্দুল্লাহ তার বক্তব্যে ইতিবাচক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে কাজ করে একটি ঐক্যবদ্ধ, সমৃদ্ধ ও সবার জন্য সমান সুযোগের বাংলাদেশ গড়তে চাই। এখানে কোনো বিভাজন থাকবে না।’