রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সংবিধান বিষয়ে তাড়াহুড়া নয়: তারেক রহমান

ডেস্ক : রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাড়াহুড়া না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিলে ভবিষ্যতের জটিলতা এড়ানো সম্ভব। মাফিয়া স্বৈরাচারের দোসররা এতদিন পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরকারকে ব্যর্থ করতে চেষ্টা করছে।

তারেক রহমান বলেন, আমরা সবাই একমত যে, পতিত স্বৈরাচার মাফিয়া সরকারের বেনিফিশিয়ারিদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রেখে অন্তবর্তী সরকারের লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ নয়। নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে পতিত পরাজিত শক্তি দেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতো। সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের কোনো একটি ঘটনার বিচার তারা করেনি।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে তাবেদার সরকারের সময় আমরা দেখেছি সন্ত্রাসী দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিভিন্ন ধর্মের ধর্মপ্রাণ মানুষদের রাখা হয়েছিল উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসক পালানোর পর দেশের হিন্দু-মুসলমানসহ সব ধর্মের মানুষ এখন আয়না ঘরের ভীতিমুক্ত। আজ আমরা স্বাধীনভাবে এখানে একত্রিত হতে পেরেছি।

তারেক রহমান বলেন, ভবিষ্যতে যেন সব ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম নিশ্চিন্তে উদযাপন করতে পারে, তেমন একটি দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি আজ ঐক্যবদ্ধ। মনে রাখতে হবে- ধর্ম যার যার, কিন্তু নিরাপত্তা পাওয়ায় অধিকার সবার।

তিনি বলেন, মাফিয়া সরকারের রেখে যাওয়া ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে মেরামত করতে অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। ১৫ বছরের জঞ্জাল শেষ করে চলমান সংস্কার কার্যক্রম শেষ করা বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি, এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করতে গিয়ে জনগণের প্রতিদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করা না গেলে, জনগণের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করার বিষয়টি উপেক্ষিত থাকলে, অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কার্যক্রম প্রশ্নের মুখে পড়বে। ফলে এই সরকারের কার্যক্রম অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এজেন্ডাভিত্তিক করা অত্যন্ত জরুরি।

তিনি বলেন, পতিত শক্তি নানা ধরনের উসকানি দিচ্ছে। কোনোভাবে এসব উসকানির ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। আসুন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, আমরা সবাই মিলে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। ধর্ম যার যার, দেশটা আমাদের সবার। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর একটা প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। আসুন আমরা সবাই মিলে একটি ঐক্যবদ্ধ ও কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, মা (দেবী দুর্গা) আসেন প্রতিবছর ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য। ৫ আগস্ট এদেশ থেকে অসুর পালিয়ে গেছে। সত্যের জয় হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপিতে গোত্র-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই সমান। এটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দল।

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুব্রত বুড়ুয়া, বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায় ও শ্রেণির পেশাজীবীরা।

বিজ্ঞাপন

Share