ব্যবহারকারীদের তথ্য নিয়ে গোপনীয়তার ঝুঁকিতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো
সপ্তর্ষি: সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ, শেয়ার এবং প্রক্রিয়াকরণ করে, তবে তারা এ বিষয়ে যথেষ্ট স্বচ্ছতা বজায় রাখছে না। এসব কোম্পানি তাদের এআই সিস্টেমগুলো কীভাবে ব্যবহারকারীদের তথ্য ব্যবহার করছে সে সম্পর্কেও খুব কম তথ্য প্রকাশ করে। ফলে ব্যবহারকারীরা নিজেদের তথ্যের ওপর পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছেন না। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে বিশেষভাবে মেটার মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্মগুলো যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ, বাইটড্যান্সের টিকটক, এবং অ্যামাজনের গেমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচের ব্যবহারকারীর তথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, কিছু কোম্পানির তথ্য ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ নীতিমালা খুবই দুর্বল।
এফটিসির এই প্রতিবেদনে ইউটিউব, এক্স (পূর্বের টুইটার), স্ন্যাপ, ডিসকর্ড এবং রেডিটসহ আরও কয়েকটি সামাজিক মাধ্যম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কোনো কোম্পানির কার্যক্রমের বিষয়ে বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এফটিসি জানায়, কোম্পানিগুলো অনলাইন বিজ্ঞাপন এবং অন্যান্য পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করে।
ডিসকর্ড প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় জানায়, গবেষণাটি বিভিন্ন ব্যবসায়িক মডেলকে একই ক্যাটাগরিতে বিবেচনা করেছে, যা সঠিক নয়। এছাড়া বিজ্ঞাপন প্রদানের সুযোগও ঠিকভাবে তুলে ধরা হয়নি। এক্সের এক মুখপাত্র বলেন, প্রতিবেদনে ২০২০ সালের নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা হয়েছে, যখন কোম্পানিটি টুইটার নামে পরিচিত ছিল। মুখপাত্র আরও জানান, এক্স ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে এবং তথ্য ব্যবহারের বিষয়টি তাদের কাছে স্পষ্ট করা হয়। ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজেদের তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণও রাখতে পারেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এক্সের মার্কিন ব্যবহারকারীদের মধ্যে মাত্র ১ শতাংশের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে।
এফটিসির চেয়ার লিনা খান বলেন, এই তথ্য নজরদারি প্রক্রিয়া কোম্পানিগুলোর জন্য লাভজনক হতে পারে, কিন্তু এটি মানুষের গোপনীয়তা ও স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলে। এমনকি এই ধরনের তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষের পরিচয় চুরি হওয়া এবং অন্যান্য ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।
অন্য কোনো কোম্পানি এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি। প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্যগুলো সামাজিক মিডিয়া কোম্পানিগুলোর কার্যক্রমের গোপনীয়তা এবং তথ্য ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতার অভাব তুলে ধরে, যা বর্তমান সময়ে ব্যবহারকারীদের জন্য একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং তারা নিজেদের তথ্যের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছেন না।