লেবাননে ৩০০ স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলা
ডেস্ক: লেবাননের দক্ষিণে একাধিক শহরে দিনের বেলা একযোগে তীব্র বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। ইসরায়েল বলছে, হিজবুল্লাহর ৩০০ স্থাপনাকে টার্গেট করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। আজ সোমবার সকালের এ হামলায় দেশটিতে অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গতকাল সোমবার সকাল থেকে লেবাননের দক্ষিণে হিজবুল্লাহর ৩ শতাধিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় লেবানিজদের নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে হিজবুল্লাহর অবস্থান থেকে দূরে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচাই আদরায়ি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানান, এখন পর্যন্ত হিজবুল্লাহর ৩০০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। এসব জায়গায় হিজবুল্লাহ অস্ত্র মজুদ করেছে।
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের ফোনে এ সংক্রান্ত সতর্কবার্তাও পাঠানো হয়, করা হয় স্বয়ংক্রিয় ফোনকল। মোবাইলে পাঠানো খুদেবার্তায় বলা হয়, হিজবুল্লাহ অস্ত্র লুকিয়ে রাখার জন্য যেসব আবাসিক ভবন ব্যবহার করেছে, সেসব ভবন থেকে বাসিন্দাদের দূরে সরে যেতে বলা হচ্ছে।
লেবাননের টেলিকম কোম্পানি ওজেরোর প্রধান ইমাদ ক্রেইদিয়েহ জানান, সোমবার ৮০ হাজারের বেশি স্বয়ংক্রিয় ফোনকল ধরা পড়েছে। মানুষের মনে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়ার এ কৌশল নিয়েছে ইসরায়েল। এটাকে মানসিক যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন লেবাননের তথ্য মন্ত্রী জিয়াদ মাকারি।
তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, লেবাননে হামলা আরো তীব্র করা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এ হামলা চলবে।
লেবাননে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ১০০ জনের বেশি ব্যক্তি নিহত ও আরো ৪০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও মেডিকেল কর্মীরাও রয়েছেন।
এক বিবৃতিতে লেবাননের সরকারি জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নারী, শিশু, প্যারামেডিকসসহ চার শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান উত্তেজনায় এখন পর্যন্ত সোমবারের হামলাই সবচেয়ে তীব্র বলে অভিহিত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল হামলা শুরুর পর থেকেই লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গেও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটছে।
এরইমধ্যে গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহর সদস্যদের যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হাজার হাজার পেজার ও ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণ ঘটে। এসব বিস্ফোরণে অন্তত ৪০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; যার জন্য ইসরায়েলকে ব্যাপকভাবে দায়ী করছে হিজবুল্লাহ। এ নিয়েও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।