রাজধানীর সাত কলেজের অভিভাবক কে !

মাজহারুল হক বাবু : রাজধানীর ৭ কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়া হয়েছিল ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি । এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারি, সোমবার এ কলেজগুলোর অধিভুক্তি বাতিল করা হয় । ফলে এসব কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আর থাকল না । এখন কলেজগুলো কীভাবে বা কার অধীনে পরিচালিত হবে তা জানে না কেউ । অধ্যক্ষরা তাকিয়ে আছেন সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে।

কলেজগুলোতে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের যে ভর্তি কার্যক্রম চলছিল তা-ও গতকাল ২৯ জানুয়ারি স্থগিত করা হয়েছে । অধ্যক্ষরা বলছেন, সরকার যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবে সেভাবেই চলবে এ ৭ কলেজ । বড় এ সাত কলেজ নিয়ে বিভিন্ন পক্ষ থেকে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের কথা বলা হলেও এর কোনো ধারণাই দিতে পারেননি কলেজগুলোর অধ্যক্ষরা ।

সরকারি সাত কলেজের জন্য স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর রূপরেখা তৈরি করতে গত বছর ডিসেম্বরে উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় মন্জুরি  কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানকে এ কমিটির প্রধান করা হয় । ইতোমধ্যে এ কমিটি বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের মতামত নিয়েছে । এরই মধ্যে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে হঠাৎই কলেজগুলোর অধিভুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত তথ্যমতে, অধিভুক্ত কলেজের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে শিক্ষাবর্ষ ২০২৪-২৫-এর ভর্তি আবেদন শুরু হয়েছে ৬ জানুয়ারি। এ আবেদন চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে গতরাতে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ জানান, এ ভর্তি আবেদন কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে । কীভাবে ভর্তিকার্যক্রম সম্পন্ন হবে এ ব্যাপারে কেউ কোনো তথ্য জানাতে পারেননি ।

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস জানিযেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নতুন করে আর শিক্ষার্থী ভর্তি হবে না । তবে বিদ্যমান শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হিসেবেই থাকবে । প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম আপাতত স্থগিত থাকবে। পরে সরকার যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবে সেভাবে পরিচালিত হবে এ সাত কলেজ।’

ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শামছুন নাহার জানিয়েছেন, ‘আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে কথা বলে উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়টি অবগত করেছি। হঠাৎ অধিভুক্তি বাতিলের পর কী করতে হবে এমন প্রস্তুতি তো আমাদের নেওয়া ছিল না । শিক্ষা মন্ত্রণালয় যেভাবে নির্দেশনা দেবে সেভাবেই চলব আমরা। তবে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা পাইনি। এ কলেজগুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় হবে কি না, এমন কোনো আলোচনাও জানতে পারিনি । হঠাৎ অধিভুক্তি বাতিল হওয়ার পর নতুন প্রক্রিয়া শুরু হওয়া আসলে সময়সাপেক্ষ । সবার জন্য সুবিধাজনক ও মঙ্গলজনক হবে এমন সিদ্ধান্তই সরকার নেবে বলে প্রত্যাশা করছি।’

সরকারি বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি সাত কলেজ নিয়ে যে সিদ্ধান্ত জানাবে তা মেনে নেব। বর্তমানে প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রমের মৌসুম। আশা করি সরকার খুব দ্রুত এ বিষয়টি সমাধান করবে।’

প্রসঙ্গত, ২৭ জানুয়ারি, সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে রাজধানীর সাত কলেজের পৃথক্করণের সিদ্ধান্ত জানান। একই সঙ্গে চলমান ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী আসনসংখ্যা ও ভর্তি ফি নির্ধারণসহ যাবতীয় বিষয়ে মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলেও উল্লেখ করেন।

৭ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের এই আন্দোলনে সাধারন জনগনের প্রতিক্রিয়াঃ

৭ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট অনেক মুল্যবান ছিল । এরপর স্ব স্ব বিস্ববিদ্যালয়ের নামে সার্টিফিকেট নিয়ে চাকুরির প্রতিযোগিতায় বেগ পেতে হবে ।

বরং আন্দোলন শুরু করা উচিৎ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কিভাবে ক্যামব্রিজ, অক্সফোর্ড, হার্ভার্ডের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে হবে ।

সকল উপজেলার কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করা হোক ! এক্ষেত্রেও কিন্তু যথেষ্ট যথোপযুক্ত কারণ রয়েছে ! উপজেলা থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এসে ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক হয়রানির স্বীকার হতে হয়, আসতে সময় এবং অর্থ খরচ হয় ।

অবশ্য ছাত্র-ছাত্রীদের নিজ নিজ বাসা-বাড়ি গুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরের দাবি করলেও মন্দ হয় না ! দাবী-দাওয়া, আন্দোলন, সংগ্রাম, হরতাল, অচল করে দেওয়ার হুমকি- ধামকির দেশ বাংলাদেশ !

এর আগে দেখলাম -পরীক্ষা দিবেনা, পাশ করিয়ে দিতে হবে ! বাহ্ বাহ্ !

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটিও ওয়ার্ল্ড রেংকিং-এ ১,০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নাম থাকেনা ! এগুলো নিয়ে কোন আন্দোলন নাই, ক্ষোভ নাই, বিক্ষোভ নাই, বক্তৃতা-বিবৃতি নাই ।

বিশ্ববিদ্যালয় বানানোর আন্দোলন না কইরা শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিক্ষার পরিবেশ ভাল করার, বিশ্ব মানের কারিকুলাম, এইসব নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করলে সেই দাবি জন শিক্ষার দাবি হিসেবে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য দাবি হিসেবে পরিগনিত হতো।

Share