যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
ডেস্ক : ঘুস-জালিয়াতির অভিযোগে ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
গত বুধবার (২০ নভেম্বর) নিউইয়র্কের একটি আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের ঘুসকাণ্ডে জড়িত এবং বিষয়টি গোপন রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে অর্থও সংগ্রহ করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গৌতম আদানি ছাড়াও সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন গৌতম আদানির ভাইয়ের ছেলে সাগর আদানি, আদানি গ্রিন এনার্জির সাবেক সিইও ভিনেত এস জেইন। গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে মার্কিন প্রশাসন।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে তাৎক্ষণিকভাবে গৌতম আদানির আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে সাগর আদানির আইনজীবী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানি এবং তার ভাইয়ের ছেলে সাগর আদানির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, আদানি এবং তার শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুস দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে লাভজনক চুক্তি করেছেন। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় ২২৩৭ কোটি ঘুস দেওয়ার প্রস্তাব করে আদানি গোষ্ঠী।
এছাড়া আদানি গ্রুপ ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ এবং বন্ডও সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে তারা এই প্রক্রিয়ায় মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছে এবং ঘুসকাণ্ড সংক্রান্ত তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রিয়ন পিস বলেছেন, অভিযুক্তরা একটি জটিল ষড়যন্ত্র পরিচালনা করেছেন যাতে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুস দিয়ে চুক্তি করতে এবং মার্কিন ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করতে পারেন।
এদিকে ঘুসকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গৌতম আদানিকে গ্রেফতার করার দাবি তুলেছেন লোকসভার বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলে রাহুল বলেন, আদানিকে সুরক্ষা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে গৌতম আদানির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও আক্রমণ করেছেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, মোদী এবং আদানি দুজনেই দুর্নীতিগ্রস্ত। আজই আদানিকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। কিন্তু আদানিকে গ্রেফতার করার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর নেই। কারণ উনি নিজেই আদানির কথায় চলছেন। বিষয়টি নিয়ে সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে কংগ্রেস প্রশ্ন তুলবে বলে জানান রাহুল গান্ধী।
বৃহস্পতিবার রাহুল অভিযোগ করেন যে, আদানির টাকায় বিজেপি চলে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে ভোটপ্রচারে গিয়ে আদানি-বিজেপি আঁতাতের অভিযোগ তুলে রাহুল দাবি করেছিলেন, মুম্বাইয়ের বিমানবন্দরের পরে ধারাভি বস্তির জমিও আদানির হাতে তুলে দিতে চান মোদী। তা থেকে আদানির ১ লাখ কোটি টাকা আয় হবে বলে দাবি করেন রাহুল।