পণ্যের মূল্য হ্রাসে রেকর্ড করল শ্রীলঙ্কা
ডেস্ক: অর্থনৈতিক সংকটে আক্রান্ত শ্রীলঙ্কা এবার এক অনন্য রেকর্ড গড়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশটির সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ; এর ফলে ওই মাস থেকেই শ্রীলঙ্কায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে এবং এ ধারা এখনো বজায় রয়েছে।
এ পর্যন্ত সর্বশেষ এই ধরনের নেতিবাচক মূল্যস্ফীতির হার দেখা গিয়েছিল ১৯৯৫ সালে, যখন শ্রীলঙ্কায় এটি নেমে গিয়েছিল শূন্য দশমিক ৯ শতাংশে। তার আগে ১৯৮৫ সালে এই হার নেমে গিয়েছিল ২ দশমিক ১ শতাংশে।
এভাবে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির যে হার রয়েছে, তা নিঃসন্দেহে ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের পর শ্রীলঙ্কার ৭৬ বছরের ইতিহাসে প্রথম।
অথচ মাত্র দুই বছর আগে, ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬৯ দশমিক ৮০। খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আক্ষরিক অর্থেই আকাশছোঁয়া হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে মাত্র দুই বছরের মধ্যে সরকারের অসাধারণ প্রচেষ্টায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
সরকারি রিজার্ভের অর্থ অপব্যয় এবং করোনা মহামারির কারণে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে শ্রীলঙ্কার ডলারের মজুত তলানিতে ঠেকে যায়, ফলে দেশটি নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে। অতীতে কখনো এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি শ্রীলঙ্কাকে।
জনগণের প্রবল বিক্ষোভের মুখে ২০২২ সালের মাঝামাঝি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকশে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তার পদত্যাগের পর রনিল বিক্রমাসিংহে নতুন প্রেসিডেন্ট হন। তার নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ২৯০ কোটি ডলারের জরুরি ঋণ পাওয়ার মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি পুনরুদ্ধার শুরু হয়।
গত সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট হন অনুরা কুমারা দিশানায়েকে। তিনি ইতোমধ্যে জানিয়েছেন যে আইএমএফের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে তিনি আগ্রহী, তবে ঋণের শর্তগুলোর মধ্যে কিছু শিথিল করতে চান।