Thursday, November 7, 2024
জাতীয়

জাতিসংঘের বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট: ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রস্তাব

সপ্তর্ষি: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের মর্যাদা, নিরাপত্তা এবং অধিকার রক্ষায় সব স্টেকহোল্ডারের সাথে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা এই সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের জন্য অপেক্ষা করছি।”

কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংকট নিয়ে জাতিসংঘ সদর দফতরে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। সেখানে তিনি তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। বৈঠকে জাতিসংঘের বিশেষ দূত জুলি বিশপ, ইউএনএইচসিআর হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ড. ইউনূস উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। তিনি বলেন, “প্রতি বছর আমাদের শিবিরগুলোতে প্রায় ৩২ হাজার নবজাতক যুক্ত হয় এবং গত দুই মাসে ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।” যদিও বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতির পরিচয় দিয়েছে, কিন্তু একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে এ পরিস্থিতি সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত চাপ সৃষ্টি করছে।

তিনি জানান, বাংলাদেশের উন্নয়ন হুমকির সম্মুখীন এবং দেশটি তার ধৈর্যের সীমায় পৌঁছেছে। ড. ইউনূস বলেছেন, “রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনই দীর্ঘমেয়াদী সংকটের সমাধান।” তিনি আফসোস করে বলেন যে, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়নি, যার ফলে গত সাত বছরে কেউ ফিরতে পারেনি।

ড. ইউনূস মনে করেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের এবং তাদের আশ্রয়দাতাদের দীর্ঘস্থায়ী অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলা হচ্ছে। তিনি নিরাপত্তার অবনতি এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ অবস্থায় তিনি মিয়ানমারে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব দেন, যেখানে সকল জাতিগত সম্প্রদায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে।

বৈঠকে তিনি তিনটি প্রস্তাবও দেন: ১. জাতিসংঘের মহাসচিবকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সব স্টেকহোল্ডারের সম্মেলন আহ্বান করার আহ্বান। ২. ইউএন সিস্টেম ও বাংলাদেশের যৌথভাবে পরিচালিত জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা। ৩. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা।

তিনি আইসিসিতে মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে শুনানির অপেক্ষায় আছেন, এবং মিয়ানমারের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য অন্যায়ের প্রতিকারকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করেন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফেসবুক সংবাদ

Moralook Limited