জাসাস সদস্য সায়মন তারিককে জাসাসের নোটিশ

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) কে ৩টি নির্দিষ্ট কারনে কেনো বহিস্কার করা হবেনা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জাসাস।

২৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য (দফতরের দায়িত্ব) মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে আগামি তিন দিনের মধ্যে জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক চিত্রনায়ক হেলাল খান, সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন এর নিকট লিখিত জবাব দিতে হবে, কেনো তাকে বরখাস্ত করা হবেনা।

অভিযুক্ত সায়মন তারিকের বিরুদ্ধে যে সকল কারণের ব্যাখ্যা চেয়েছে জাসাস-

১। বিগত ৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ, বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) গেট সংলগ্ন ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে জাসাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে যুবলীগের সদস্যদের নিয়ে তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) অনুষ্ঠানে প্রবেশ করলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করেন। তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) এর মাধ্যমে যুবলীগের অনুপ্রবেশ স্পষ্টত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আদেশ অমান্য হয়েছে মনে করেন নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক একাধিক জাসাস নেতা। সেই ঘটনার পরে পুনরায় ২১ শে ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) আওয়ামী দোসরদের সাথে নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে আওয়ামী পুর্নবাসনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে মনে করেন জাসাস।

২। জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির নাম ব্যবহার করে তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) স্বঘোষিত জাসাস চলচ্চিত্র ইউনিট গঠন করেছেন এবং আওয়ামী যুবলীগ অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন। যা চলচ্চিত্র অঙ্গনে বিএনপির নেতাকর্মী, সমর্থকদের মধ্যে চরম বিশৃংখলা সৃষ্টি করেছে। দলীয় নাম ব্যবহার করে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করতেই অবৈধ পন্থা অবলম্বন করেছেন বলে মনে করেন জাসাস নেতৃবৃন্দ। তিনি কেনো জাসাস চলচ্চিত্র ইউনিট করেছেন, তার কারণ ও ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে জাসাস।

৩। সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া এফডিসি’র এমডি মাসুমা রহমান তানির বিরুদ্ধে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর এবং শেখ মুজিবের উপর ভিত্তি করে প্রথম চলচ্চিত্র নির্মান করে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ তুলে এফডিসির এমডির পদত্যাগ দাবি করে ৭২ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দিয়েছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক চিত্রনায়ক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল। জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্ববায়ক চিত্রনায়ক হেলাল খান, সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন যৌথ বিবৃতি দিয়ে এফডিসির এমডি মাসুমা রহমান তানির পদত্যাগ দাবি করেছেন। অথচ জাসাস সদস্য  তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) সদ্য নিয়োগ পাওয়া এফসিডির বিতর্কিত এমডি মাসুমা রহমান তানিকে আওয়ামী দোসরদের সাথে নিয়ে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। যা স্পষ্টত দলীয় শৃংখলা ভঙ্গই শুধু নয়, দলীয় আদর্শের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপি সমর্থক চলচ্চিত্র কর্মীরা।

উল্লেখ্য, জাসাস সদস্য তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) সম্প্রতি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির স্থগিত হওয়া আওয়ামী লীগের ভাগাভাগির নির্বাচনে চলচ্চিত্র লীগের সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, চলচ্চিত্র লীগের সাধারন সম্পাদক শাহ আলম কিরণ, আওয়ামী দোসর শাফি উদ্দিন শাফি প্যানেল থেকে প্রার্থী হন। তুমুল প্রতিবাদের মুখে সেই নির্বাচন বন্ধ হবার পরে তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) একের পর এক বিতর্কিত কাজ করেই যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ৫ আগস্টের পরে জাসাসের নাম ব্যবহার করে তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) আওয়ামী লীগের দোসার অভিনেতা ডিএ তায়েবের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে একাধিক সিনেমা নির্মান করতে আওয়ামী যুবলীগের সদস্যদের নিয়ে একটি টিম গঠন করেছেন বলে অভিযোগ আছে। আওয়ামী দোসার অভিনেতা ডিএ তায়েবের স্ত্রী বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবা শাহরীন(কলস) প্রতীক আওয়ামী প্যানেল থেকে ভাগাভাগির নির্বাচনে টাঙ্গাইল জেলার মির্জপুর উপজেলার ভাইচ চেয়াম্যান হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ৫ আগস্টের পরে দেশের বাহিরে পলাতক থাকার পরে ১৪ অক্টোবর দেশে ফিরলে জাসাস সদস্য তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) যুবলীগের কর্মীদের সাথে নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিনন্দন জানায় এবং বাসায় পৌছিয়ে দেয়। যার প্রেক্ষিতে ডিএ তায়েব আওয়ামী দোসার ইয়ামিন হক ববি কে নিয়ে “বউ” শিরোনামে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করে নিজের স্ত্রীকে রক্ষা করতে পাহারাদার ভাড়াটিয়া হিসেবে তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) কে নিয়োগ করেন।

ওয়ার্ল্ড নিউজ অফ বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে খোজ নিয়ে জানা গেছে সাইমন তারিকের টিমের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো। ৫ আগস্টের পরে তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) জাসাসের নাম ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের দোসরদের রক্ষা করার জন্য যুবলীগের কর্মীদের সাথে নিয়ে টিম গঠন করে নিয়মিত চাঁদা তুলছেন, হুমকি দিচ্ছেন। গত ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নির্বাচন স্থগিত হবার পরে জাসাস সদস্য তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক) তার অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় বিএনপি পন্থি একাধিক পরিচালককে হুমকি প্রদান করেছেন বলে অভিযোগ আছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বিএফডিসি তে গত ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নির্বাচন বন্ধ হবার পরে একাধিক চলচ্চিত্র পরিচাকের গায়ে হাত তোলারও।

 

Share