সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ হবে কাউন্সিলের মাধ্যমে
ডেস্ক : সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক নিয়োগের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করবে ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে স্বতন্ত্র এই কাউন্সিল যোগ্য ব্যক্তির নাম রাষ্ট্রপতি বরাবর সুপারিশ করবে।
এমন বিধান রেখে আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ দিন বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই অধ্যাদেশের বিষয়বস্তুসহ অন্যান্য সিদ্ধান্ত ও উদ্যোগের কথা জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের জন্য পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় এবং স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তমত প্রকাশ-সংক্রান্ত মামলা ও ‘গায়েবি’ মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিচারক নিয়োগের জন্য আইন দিয়ে যোগ্যতা নির্ধারণে ব্যবস্থার কথা সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও কার্যকর ফলাফল দেখা যায়নি। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়েও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করে সুপারিশের জন্য ২০০৮ সালের ১৬ মার্চ ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কমিশন অধ্যাদেশ’ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সংসদে এটি আইন হিসেবে পাস হয়নি। সর্বোচ্চ আদালতে দলীয় বিবেচনায় বিচারক নিয়োগের অভিযোগ অনেক দিনের। বিভিন্ন সময় নীতিমালা বা আইন প্রণয়ন করে বিচারক নিয়োগের দাবি উঠেছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, উচ্চ আদালতে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞ, দক্ষ ও দলনিরপেক্ষ এবং প্রকৃত যোগ্য ব্যক্তিরা বিচারক হিসেবে নিয়োগ হবেন—এমন একটি চাহিদা সমাজে বহু বছর ধরে ছিল। এখন এ বিষয়ে আইন হয়েছে। একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উচ্চ আদালতে বিচারকেরা নিয়োগ পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এই কাউন্সিল নিজ উদ্যোগে উপযুক্ত প্রার্থীদের নাম সংগ্রহ করবে। পাশাপাশি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেও আবেদন আহ্বান করবে। কাউন্সিল প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করার পর প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেবে। এরপর কাউন্সিলের সুপারিশ প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। তাতে সংবিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি এ বিষয়ে পরামর্শ দেবেন। পরামর্শ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি সুপারিশ করা ব্যক্তিদের মধ্য থেকে বিচারক নিয়োগ দেবেন।
এই অধ্যাদেশ বিদ্যমান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে কি না সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, হবে না। এ–সংক্রান্ত বিষয়ে ইতিমধ্যে মামলা ও এর পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিদের মতামতের কথা তুলে ধরেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দাবি দীর্ঘদিন ধরে আছে। এটির উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। একটু সময় লাগছে খুঁটিনাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য।