নোয়াখালীতে বিএনপি নেতাকে ট্যাগ দিয়ে হামলা করেছে ছাত্রদল
নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আমানউল্যাহপুর ইউনিয়নে ছাত্রদল ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত উপজেলার আমানউল্যাহপুর ইউনিয়নের মহেশপুর ও কাচিহাটা সর্দার দিঘির পাড় এলাকায় কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষ হয়।
পুরোনো বিরোধের জের ধরে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম মাসুমের লোকেরা বিএনপির ওয়ার্ড সেক্রেটারি সোহেলের ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে সোহেলের লোকেরা জড়ো হলে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এতে ইউনিয়ন ছাত্রদল সেক্রেটারি ইব্রাহিম মাসুম গুলিবিদ্ধ হয়। আহত হয়েছে অনন্তত আরো ৩জন। অভিযোগ উঠেছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সাথে সম্পর্ক রাখায় দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির আমানউল্যাহপুর ইউনিয়নের ১নং কাঁচিহাটা ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারি সোহেলের (৪০) সাথে আমানুল্ল্যাহপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম মাসুমের (২৭)বিরোধ চলে আসছিলো।
এ ব্যাপারে আমানউল্যাহপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম মাসুম অভিযোগ করে বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মহেশপুরে জামায়াতের সমর্থক মাদকাসক্ত মো. সোহেলকে (৪০) হাতেনাতে আটক করে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। পরে তাকে থানা-পুলিশের কাছে দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় কাঁচিহাটা দিঘির পাড় এলাকায় তার লোকজন ও সোহেলের লোকজনের সাথে ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ইব্রাহিম মাসুম জানান, এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সর্দার দিঘির পাড়ে বসে চা খাওয়া অবস্থায় মাসুম ও সোহেলের সাথে কথা-কাটাকাটি হয়।সোহেল ও তাঁর আত্মীয়-স্বজন এবং সোহেলের লোকেরা এসে তাঁদের কিল-ঘুসি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে পাশের একটি ফার্মেসিতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। সেখানেও সোহেলের লোকেরা হামলা চালায় এই সময় ইব্রাহিম মাসুম পায়ে গুলিবিদ্ধ হন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোহেল জানান তার ব্যাপারে মিথ্যা,বানোয়াট বক্তব্য রটানো হয়েছে। তিনি মাদকাসক্ত নন এবং মাদকসহ তাকে হাতেনাতে ধরার অভিযোগটিও মিথ্যা। স্থানীয় মিজানের মাছের ঘেরের সামনে থেকে ব্যক্তিগত বিষয়ে আলোচনার কথা বলে ইব্রাহিম মাসুম, রাকিব, সুমন, হাবিব সহ অন্যান্যরা সোহেলকে তাদের নিজেদের নেতৃত্বে থাকা এলাকায় নিয়ে যান এবং কথা বলার এক পর্যায়ে সোহেল ও তার পরিবারের উপর দলবল নিয়ে হামলা চালায়।
সোহেল আরো বলেন উক্ত হামলা হওয়ার সময় আমানুল্ল্যাহপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস শহীদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং আব্দুস শহীদের মধ্যস্থতায় আমাদের মধ্যকার বিরোধ মিমাংসা হবে বলে আমি আশাবাদী ছিলাম।
জামায়াত-শিবির প্রসঙ্গে সোহেল বলেন,একই এলাকায় অনেক দলীয় মানুষের বসবাস।সেই সুবাদে বিগত দিনে বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনে একত্রে আন্দোলন করায় স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সাথে আমার সুসম্পর্ক গড়ে উঠে।সেটিকে কাজে লাগিয়ে ইব্রাহিম মাসুম ও তার লোকেরা ব্যক্তিগত বিরোধ সৃষ্টি করে এবং বিনা উস্কানিতে আমার উপর হামলা চালায়।
ঘটনার মিমাংসার সত্যতার ব্যাপারে জানতে আমানুল্ল্যাহপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস শহীদকে একাধিকবার ফোন কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
শিবির সম্পৃক্ততার ব্যাপারে নোয়াখালী জেলা উত্তর শিবির সভাপতি মশিউর রহমান ফাহাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান উক্ত ঘটনা কিংবা ছাত্রদল নেতা ইব্রাহিম মাসুম গুলিবিদ্ধের সাথে ছাত্রশিবিরের দূরতম সম্পর্ক নেই। ছাত্রশিবিরকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই দেশের কিছু গনমাধ্যম উদ্দেশ্যেপ্রনোদিত ভাবে শিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছেন।
শিবিরের নোয়াখালী জেলা উত্তর শাখার প্রচার সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রেস বার্তার মাধ্যমে উক্ত ঘটনায় শিবিরের সম্পৃক্ততার বিষয় উল্লেখ করে প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
উক্ত সংঘর্ষের ঘটনা নিশ্চিত করে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, ‘কাঁচিহাটা বাজারে দুর্বৃত্তদের হামলায় ছাত্রদলের একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।