উজানের ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি, লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় বন্যা

সপ্তর্ষি: টানা ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা লালমনিরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলায় বন্যার সৃষ্টি করেছে এবং প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় হাতীবান্ধার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারাজে পানি প্রবাহ ৫২.১৭ মিটার রেকর্ড করা হয়, যা বিপৎসীমার (৫২.১৫ মিটার) চেয়ে ২ সেন্টিমিটার বেশি। শনিবার দুপুর থেকে পানির প্রবাহ বিপৎসীমার কাছাকাছি ছিল, যার ফলে তীরবর্তী অঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে শুরু করে।

ভারতে সিকিম থেকে উৎপন্ন তিস্তা নদী বাংলাদেশে প্রবেশের আগেই ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে ভারত তার স্বার্থে পানি নিয়ন্ত্রণ করে। বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি গেট খুলে বাংলাদেশে ছেড়ে দেয়, আর শুষ্ক মৌসুমে গেট বন্ধ করে রেখে বাংলাদেশকে পানির অভাবে ফেলে দেয়।

উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খোলা হয়েছে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যার ফলে নদী তীরবর্তী এলাকার রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্টসহ ফসলি জমি এবং পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। শনিবার রাতভর সলেডি স্প্যার বাঁধ-২ এর ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়, যা ভাটির এলাকার লোকজনকে আতঙ্কিত করেছে। বাঁধ রক্ষা করতে স্থানীয়রা রাত জেগে বস্তা ফেলে কাজ করেছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর বাসিন্দারা বিশাল দুর্ভোগের মধ্যে আছেন। তারা ত্রাণ সামগ্রী ও নিরাপত্তার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন। ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, প্রায় তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে।

Share